শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধিঃ পশ্চিম বনবিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কৈখালি ষ্টেশন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্মাণাধীন ভবনের সিমেন্ট চুরি করে বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১০ই জুলাই) রাতে হরিনগর বাজার থেকে স্থানীয়রা ২ টা ট্রলারসহ আনুমানিক ১২০ ব্যাগ সিমেন্ট আটক করে জনতা। কৈখালি ষ্টেশনের আওতাধীন টেংরাখালি বনটহল ফাঁড়ির নতুন ভবন নির্মাণের কাজ চলমান। এই কাজের দেখভালের দায়িত্ব পান কৈখালি ষ্টেশন কর্মকর্তা সাদ আল জামি। নির্মাণাধীন এই ভবন নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে অনেক জল্পনা কল্পনার আছে আগে থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, বনবিভাগের সহযোগী সংগঠন সিপিজির সদস্য ইউনুস আলীর মাধ্যমে ইতিমধ্যে নির্মাণাধীন কাজের সিমেন্ট, রড়সহ কনস্ট্রাকশনে ব্যবহৃত বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করে বেশ ফুলে ফেঁপে উঠেছেন স্টেশন কর্মকর্তা সাদ আল জামি। মামলার ভয়ে স্থানীয়রা মুখ না খুললেও সিমেন্ট চুরি করে বিক্রি হচ্ছে এমন খবর পৌঁছে দেন হরিনগর বাজারের একটি সচেতন মহলকে। তথ্য অনুযায়ী পাহারা দিতে থাকে তারা। সোমবার রাত ৮টার দিকে দুইটা ট্রলার(ইঞ্জিন চালিত নৌকা) করে আনুমানিক ১২০বস্তা ফাইভ রিং সিমেন্ট সহ সিপিজি সদস্য ইউনুস আলী হরিনগর বাজারে পৌছায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের সাথে থাকা শ্রমিক দিয়ে হরিনগর বাজারে অবস্থিত মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারি মোঃ সাইফুল্লাহ টুটুলের দোকানে সিমেন্টের বস্তা ডুকাতে থাকে। এ সময় স্থানীয়রা টুটুল কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি সাইফুলের নিকট থেকে ৫৩০ টাকা করে কিনে নিচ্ছি। সাইফুলের সিমেন্ট নদী দিয়ে আসছে কেন এমন প্রশ্নে হতভম্ব হয়ে যান টুটুল তখনই স্থানীয়রা সিমেন্ট গুলো জব্দ করে প্রশাসনের সহযোগিতা চান। অবস্থা বেগতিক দেখে বনবিভাগের সহযোগীরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
কৈখালি ষ্টেশন কর্মকর্তা সাদ আল জামি বলেন, এসিএফ স্যার আমার কাজের দায়িত্বে দিয়েছে। তাই ফাইভ রিং সিমেন্টর মান ভালো না থাকায় পরিবর্তন করতে পাঠিয়েছি। বিক্রয় করা হচ্ছে কেন জানতে চাইলে তিনি কোন সদ উত্তর দিতে পারিনি।
সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা এম কে এম ইকবাল হোছাইন চৌধুরি বিষয়টা অস্বীকার করে বলেন, সিমেন্ট পরিবর্তন করা বা বিক্রয় করার বিষয় আমি জানি না। বনবিভাগের কোন সদস্য এধরনের কাজ করতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা করবে ঠিকাদার আমাদের কোন স্ট্যাফ করতে পারে না। যদি এ ধরনের কাজ করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া কৈখালি ষ্টেশন কর্মকর্তা জামির বিরুদ্ধে সুন্দরবনের দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ রয়েছে। শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, খবর পেয়ে এস আই সেলিম রেজাকে পাঠিয়ে মাল জব্দ করেছি।তদন্ত অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিবো। বনবিভাগের এমন কর্মকাণ্ডে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা। সুধি মহলের দাবি, বনবিভাগ সুন্দরবনে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে যুক্ত এ ঘটনা তার বাস্তব প্রমাণ। তারা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আমরা সব পারি। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছেন স্থানীয় জনতা সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।